উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে মুজিকা মারা গেছেন। তিনি ‘পেপে’ নামে পরিচিত ছিলেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। বুধবার (১৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।বিশ্বজুড়ে বামপন্থিদের কাছে এক কিংবদন্তি ও গেরিলা যোদ্ধা ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত উরুগুয়ে শাসন করেছেন। তার বিনয়ী জীবনযাত্রার কারণে বিশ্বের ‘সবচেয়ে দরিদ্র প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।খাদ্যনালীর ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ এক বছরের লড়াইয়ের পর চলতি মে মাসের শুরুতে তাকে প্যালিয়েটিভ কেয়ারে রাখা হয়েছিল।
উরুগুয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ামান্দু ওরসি এক্স হ্যান্ডলে তার মৃত্যুর খবর জানান। শোকবার্তায় বলেন, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে আমরা আমাদের কমরেড পেপে মুজিকার প্রয়াণের খবর জানাচ্ছি। প্রেসিডেন্ট, রাজনৈতিক কর্মী, পথপ্রদর্শক এবং নেতা। প্রিয় বন্ধু, আপনাকে আমরা খুব মিস করব।’তিনি আরও লিখেছেন, ‘আপনি আমাদের যা দিয়েছেন তার জন্য এবং জনগণের প্রতি আপনার গভীর ভালোবাসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি তবে তিনি খাদ্যনালীর ক্যান্সারে ভুগছিলেন।প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার সরল জীবনযাপন, ভোগবাদের সমালোচনা এবং বেশ কয়েকটি সামাজিক সংস্কারমূলক প্রচারণা চালানোর জন্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
তার সময়ে গাঁজার বিনোদনমূলক ব্যবহারকে বৈধতা দেয় উরুগুয়ে। এসবের মধ্য দিয়ে মুজিকা ল্যাটিন আমেরিকা এবং তার বাইরেও একজন সুপরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন।তরুণ বয়সে, মুজিকা উরুগুয়ের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে একটি ন্যাশনাল পার্টির সদস্য ছিলেন, যা পরবর্তীতে তার সরকারের মধ্য-ডানপন্থী বিরোধী দলে পরিণত হয়।১৯৬০-এর দশকে, তিনি গেরিলা গ্রুপ টুপামারোস ন্যাশনাল লিবারেশন মুভমেন্ট (এমএলএন-টি) প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেছিলেন।
এরপর কিউবার বিপ্লব এবং আন্তর্জাতিক সমাজতন্ত্রের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে, এমএলএন-টি উরুগুয়ের সরকারের বিরুদ্ধে গোপন প্রতিরোধের একটি প্রচারণা শুরু করে।এই সময়ের মধ্যে, মুজিকা চারবার ধরা পড়েন। এর মধ্যে ১৯৭০ সালে, তাকে ছয়বার গুলি করা হয় এবং তিনি প্রায় মারা গিয়েছিলেন।২০০৫ সালে, তিনি উরুগুয়ের বামপন্থি জোট ফ্রেন্টে আম্পলিওর প্রথম সরকারের মন্ত্রী হন। ২০১০ সালে উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট হন।